জীবন থাকতে পেলেন না চিকিৎসা, হাসপাতাল করিডোরে মৃত্যু

আজকাল বার্তা ডেক্স---- 

জীবন থাকতে পেলেন না কোন চিকিৎসা। করিডোরে ধুকে ধুকে মৃত্যু কোলে ঢলে পড়লেন নাম না জানা যুবক। প্রাথমিক চিকিৎসা দিলেও কোন আত্মীয়স্বজন না থাকায় ভর্তি করেনি হাসপাতালে।

 এত বড় একটি হাসপাতালে ভর্তি না করে করিডোরে মৃত্যু হলো অজ্ঞাত ব্যক্তির এতে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন সাধারন রোগীরা। অবশেষে কয়েকদিন ধুকে ধুকে মৃত্যু বরন করলেন করিডোরে অবস্থান নেয়া অজ্ঞাত ব্যক্তি। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলার করিডোর থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির (৩৫) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।  

পুলিশ বলছে, ওয়ার্ডের করিডোর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হলেও হাসপাতালে ওই ব্যক্তি জীবিত থাকার সময় কোনো চিকিৎসা পেয়েছেন কিনা এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।রোববার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ। পরে জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক ওই ব্যক্তির ইসিজি করার পর তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ওয়ার্ড মাস্টার মো. শরিফুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) দিনগত রাত থেকে ২২০ নম্বর ওয়ার্ডের করিডোরে অবস্থান করছিলেন ওই ব্যক্তি। ১৫ অক্টোবর তাকে সেখানে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে কর্মচারীরা তাকে খবর দেন। তখন তিনি হাসপাতালের পুলিশের পাশাপাশি বিষয়টি তিনি শাহবাগ থানাকে অবগত করেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়।  

তিনি আরও জানান, গত ১৪ অক্টোবর দিনগত রাতে দুইজন ব্যক্তি তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন চিকিৎসার জন্য। পরে ওই ওয়ার্ডের সামনে করিডোরে রেখে তারা চলে যান।  

তবে ওয়ার্ডে লোকজন জানায়, ওই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তবে চিকিৎসকরা তাকে ভর্তি করেননি। ওই ব্যক্তির পায়ে পুরাতন সমস্যা ছিল, তিনি হাঁটতে পারতেন না।

হাসপাতালের একাধিক লোক নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, এত বড় সরকারি একটি হাসপাতাল অথচ ওয়ার্ডের সামনে করিডোরে ভর্তি ছাড়া ও চিকিৎসাবিহীন গত দুইদিন ধরে পড়েছিল ওই ব্যক্তি। অবশেষে হাসপাতালের ভেতরেই ধুঁকে ধুঁকে তার মৃত্যু হয়। এর দায় কাদের?  

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, ওই ব্যক্তির নামপরিচয় জানা যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, কোনো ব্যক্তি তাকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসে হাসপাতালে ফেলে গেছেন। 

এদিকে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, হাসপাতালের করিডোরে অবশ্যই ওই ব্যক্তিকে চিকিৎসার জন্য কেউ নিয়ে এসেছিলেন। জানা গেছে, ওই ব্যক্তি হাঁটতে পারতেন না।  তাই নিশ্চয়ই কেউ তাকে নিয়ে এসেছেন। তবুও বিষয়টি আমরা খোঁজ-খবর নিচ্ছি।