সংবাদ শিরোনাম

বরিশালে বাড়িমালিকদের খামখেয়ালীপনায় ভাড়াটিয়াদের দূর্ভোগ


রিপোর্ট এম সাইফুল--

বরিশাল নগরীতে মাস শেষ না হতেই শুরু হয় বাড়িভাড়া বাড়ানোর তোরজোর। তা নিয়ে বাড়ির মালিকের সাথে বাকবিতন্ডা ধস্তাধস্তি সহ শারিরিক লাঞ্চিত হতে হয় ভাড়াটিয়াদের। শেষে ঐ বাড়ি ছেড়ে অন্য বাড়ি খুজতে হয় ভাড়াটিয়াদের। নগরীর প্রায় অধিকাংশ বাড়ির মালিকরা কারনে অকারনে হঠাৎ করেই বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে ফেলে। এতে বছরজুরে দূর্ভোগ পোহাতে হয় অসহায় ভাড়াটিয়াদের। বরিশালে নগরীতে প্রায় ৬লাখ লোক বাস করে। যাদের মধ্যে হোল্ডিং আছে প্রায় ৩০হাজার। আর এদের মধ্যে বেশিরভাগ ভাড়াটিয়া। এসব ভাড়াটিয়াদের মধ্যে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারিরা থাকলেও বেশিরভাগ রয়েছে স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ভাড়াটিয়াদের মধ্যে বড় অংশ হচ্ছে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষ। ইচ্ছেমত ভাড়া বাড়ানো ও নির্যাতনে বাড়ির মালিকদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে ভাড়াটিয়ারা। সরেজমিনে খোজ নিয়ে বিভিন্ন এলাকার ভাড়াটিয়াদের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, বেশির ভাগ বাড়িওয়ালা বছর শেষে বাড়িভাড়া বৃদ্ধি করেন। কোনো কোনো বাড়ির মালিক বছরে দুইবার ভাড়া বৃদ্ধি করেন-জানুয়ারি এবং জুন মাসে। কোনো কোনো বাড়িওয়ালা যখন খুশি ভাড়া বাড়িয়ে দেন। এ নিয়ে ভাড়াটিয়াদের দুর্ভোগের শেষ নেই। নগরীর ১১নং ওয়ার্ড চাঁদমারী মাদ্রাসা সড়কে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক ভাড়াটিয়া জানান, বাসার কোনো পানির কল বা অন্য কিছু নষ্ট হলে বাড়িওয়ালা সেরে দেন না। ভালো একটি পানির কল এক হাজার টাকা। আমরা কি মাসে মাসে শুধু ইটপাথরের ভাড়া দেই? এসব কলের ভাড়া দেই না? তাহলে এসব কল আমরা লাগাব কেন?অনেক ভাড়াটিয়া অভিযোগ করেছেন, বাসায় মেহমান এলে অনেক বাড়িওয়ালা সহজভাবে নিতে চান না। কখনো কখনো মেহমান বেশি দিন অবস্থান করলে আকারে ইঙ্গিতে অপমানজনক কথা বলেন বাড়িওয়ালা। ভাড়াটিয়ারা অভিযোগ করে বলেন , বাড়িভাড়া বৃদ্ধির কোনো প্রতিবাদ করলে বাড়িওয়ালারা এক কথা বলে দেনÑ ‘পোষাইলে থাকেন না পোষাইলে চলে যান। ভাড়াটিয়ারা বলেন, তারা বাড়ির মালিকদের কাছে জিম্মি, অসহায়। মালিকরা স্থানীয়ভাবে শক্তিশালী, প্রভাবশালী ও সুসংগঠিত হওয়ায় কোন কিছুই বলা যাচ্ছে না। সবকিছু বিবেচনা করে নীরবে বাসা ছেড়ে চলে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না তাদের।একধাপে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা বাড়িভাড়া বৃদ্ধি করা সত্তেও বাড়ি ছেড়ে দিতে পারেন না অনেক ভাটাটিয়া। বিভিন্ন এলাকার ভাড়াটিয়াদের সাথে আলাপকালে তারা আরো জানান, তাদের বাচ্চারা এলাকার স্কুলে পড়ে। অনেক সময় তাদের পরীক্ষা থাকে। বাচ্চার বাবা এলাকায় চাকরি করে। এসব কারণে চাইলেই হঠাৎ করে বাসা বদলানো যায় না। তা ছাড়া বাসা বদলের নানা ঝামেলা থাকে। খরচ আছে। জিনিসপত্র নষ্ট হয়। বাসা খোঁজা এবং বাসা বদল করতে পরিবারের সবাইকে হাড়ভাঙা খাটুনির শিকার হতে হয়। এসব কারণে বাসা বদল করতে চান না অনেকে। আর এ সুযোগ নেন অনেক বাড়িওয়ালা। এদিকে একটি সূত্র জানায়, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে বাড়ি বাড়ি ভাড়া বিষয়ে কোন নিতিমালা নেই । যার ফলে বাড়ি ভাড়া বৃদ্দিতে বাড়ির মালিকদের কোন আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। ফলে বছরের পর বছর ভোগান্তি দিন গুনতে হচ্ছে ভাড়াটিয়াদের। এ ব্যপারে সিটি কর্পোরেশনের এক কর্মকর্তা জানান, সিটি কর্পোরেশন থেকেও তো বেশি পরিমান কর আদায় করা হচ্ছে না ।সর্বোচ্চ বছরপ্রতি ৫/১০ টাকার করে কর বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু বাড়ির মালিকরা বছওে ৩- ৫ হাজার টাকা বাড়িয়েছে বাড়ির ভাড়া। এতে বাড়ির মালিকরা বাড়ি ভাড়া বাড়িয়ে কি স্বার্থ হাসিল করছেন সেটাই অজানা। এভাবে ভাড়া বৃদ্দি মোটেই কাম্য নয় । এদিকে সিটি কর্পোরেশনের কাছে অতিরিক্ত বাড়ি ভাড়া ও ভাড়াটিয়া নির্যাতন বন্ধে জোর দাবী ও আইনুনাগ ব্যবস্থা কামনা করছে ভুক্তভোগী ভাড়াটিয়ারা।

Previous Post Next Post